Thursday, November 5, 2015

ধূমপান ছাড়ার উপায়। আপনিও ছাড়তে পরেন নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করে

আসলে ধূমপান ত্যাগ করা কঠিন একটা
ব্যাপার, আপনি যদি ধূমপায়ী হন এবং
ধূমপান ত্যাগ করেন, সম্ভবত এটি আপনার
জীবনের সবচেয়ে কঠিন কাজ। অনেকে
বলেন, ধূমপান ত্যাগের জন্য আপনার ইচ্ছে
শক্তিই যথেষ্ঠ। কথাটি আসলে ঠিক নয়,
ধূমপান ত্যাগের জন্য আপনার ইচ্ছা শক্তি
প্রধান কারন হলেও যথেষ্ঠ নয় মোটেও।
এটা ঠিক যে এই কঠিন কাজটি
অনেকেই করতে পেরেছেন, আপনিও
করতে পারেন। আপনি যদি আগে
কয়েকবার ধূমপান ত্যাগের চেষ্টা করা
ব্যর্থ হয়ে থাকেন, চিন্তা নেই। ধূমপান
ত্যাগে প্রতিটি ব্যর্থতা আপনাকে
আরো সহজে ধূমপান ত্যাগের
কাছাকাছি নিয়ে যায়। এটা আমার
অভিজ্ঞতা নয়, অভিজ্ঞজন থেকে
পাওয়া বাক্য। যাই হোক, ধূমপান ছাড়ার
জন্য যা যা করতে হবে।
১) সিদ্ধান্ত নিন, আপনি ধূমপান ছাড়তে
চান কি-না, একমাত্র নিজের চাওয়া
ছাড়া আর কারো চাওয়াতে ধুমপান
ছাড়ার চেষ্টা করা সফলতার
সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। যখন আপনি
নিজে নিজেকে বলবেন যে ধূমপান
ছেড়ে দেবো, আপনি তখন ধূমপান
ছাড়ার কঠিন যুদ্ধে এককদম এগিয়ে
গেছেন।
২) আমরা সবাই ধূমপানের অপকারিতা
সম্পর্কে জানি এবং 'আমি জানি' এই
কারনে এই সমস্ত অপকারিতাগুলি
আমরা এড়িয়ে গিয়ে ধূমপান করি।
আপনি যদি ধূমপান ছাড়ার সিদ্ধান্ত
নিয়ে থাকেন, তাহলে আরো বেশী
বেশী করে এর অপকারিতা গুলি
সম্পর্কে জানুন, আলাপ করুন, মাথায়
রাখুন।
৩) গত পাঁচ বছরে ধূমপানের পেছনে
আপনি কত খরচ করেছেন সেটা হিসাব
করুন, আরো হিসাব করুন সেই অর্থ দিয়ে
উপহার কিনে আপনি নিজেকে, বাবা-
মা কে কিংবা প্রিয়জনকে কত খুশী
করতে পারতেন। ধূমপানে খরচ করা
অর্থকে নিজের স্বার্থে ব্যাবহার
করতে গিয়ে কতটা স্বার্থপরতার পরিচয়
দিয়েছেন সেটা চিন্তা করুন।
৪) দিন ঠিক করুন, যেকোন দিন হতে
পারে, আজ বা এই মূহুর্ত।
৫) ধাপে ধাপে আপনি ধূমপান ছাড়তে
পারেন, শুরু করতে পারেন গাড়ীতে
ধূমপান না করা দিয়ে বা রাতে
বাসায় ধূমপান বন্ধ করা দিয়ে অথবা
সকালে খালি পেটে ধূমপান বন্ধ করে।
৬) বন্ধুবান্ধব যারা ধূমপান ছেড়ে
দিয়েছে তাদের সাথে আলাপ করুন,
পরামর্শ নিন।
৭) আপনার ধূমপানের সাথীদের কখনো
ধূমপান ছাড়তে উৎসাহ দিবেন না,
তাহলে তারাও আপনাকে ধূমপান
উৎসাহিত করতে পারে, বরং আপনি
ধূমপান ছাড়তে চাইছেন সে ব্যাপারে
বন্ধু বান্ধবদের পরামর্শ ও সাহায্য
চাইতে পারেন। বন্ধুবান্ধবের ঠাট্টা,
টিপ্পনি দুই কান দিয়ে ঢুকিয়ে নাক
দিয়ে ফোস করে বের করে দিন।
৮) আপনি ধূমপান ছাড়ছেন, এটা আপনার
একটা অর্জন। এই অর্জনকে প্রতিদিন
উপভোগ করুন।
৯) নিকোটিন ছাড়ার কিছু উপসর্গ
দেখা দিতে পারে। দেশে এখন ধূমপান
ছাড়ার সহযোগী ঔষধ পাওয়া যায়,
সম্ভবত বেক্সিমকো ফার্মার।
ডাক্তারের সাথে আলাপ করে সেই
ঔষধ গ্রহন করা যেতে পারে।
১০) যেদিন সিগারেট ছাড়বেন, একটুও
সিগারেট টানবেন না, একটানও না!
১১) বাসা থেকে এসট্রে, সিগারেট দূর
করুন।
১২) আপনার ধূমপানের সময়ে আপনি
চুইংগাম চিবুতে পারেন, একটু
হাঁটাহাঁটি করতে পারেন বা চা-কফি
খেতে পারেন। অভ্যাস বদল করুন, ধরু্ন
আপনি সকালের চা রাস্তায় খান
সাথে একটি সিগারেট, আপনি বাসায়
চা খেয়ে বের হন অথবা কর্মস্থলে
গিয়ে চা খান। আপনার লাইফ ষ্টাইলের
যেসব জায়গায় সিগারেট জড়িত সেসব
জায়গায় পরিবর্তন আনুন।
১৩) যে সব স্থানে গেলে আপনার
সিগারেট খাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে
সেসব স্থান আপাতত এড়িয়ে চলুন।
ধূমপান করেন না, এমন বন্ধুদের সঙ্গ বেশী
উপভোগ করুন।
১৪) আপনার বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের
সদস্যদের উৎসাহ ও প্রেরনা অনেক
উপকার করতে পারে।
সবচে বড় ব্যাপার ঘুরেফিরে ওই একটাই,
ইচ্ছে করুন যে আপনি আর ধূমপান করবেন
না। এবার আত্মবিশ্বাসী হোন, পরখ করুন
নিজের ইচ্ছা শক্তিকে। যদি আপনার
ইচ্ছাশক্তি যথেষ্ঠ শক্তিশালী হয়,
তাহলে অন্য সব কিছু সেই শক্তি দিয়ে
জয় করা সম্ভব।
ধূমপান ছাড়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
হিসাবে যা যা দেখা দিতে পারে
১) মেজাজ বিলা (২-৪ সপ্তাহ) ২) দূর্বল
বোধ ( ২-৪ সপ্তাহ) ৩) ঘুমের ব্যাঘাত (১
সপ্তাহ) ৪) গলা শুকিয়ে যাওয়া, শুকনা
কাশি, কফ (১ সপ্তাহ) ৫) ঘুম ঘুম ভাব (১-২
দিন) ৬) মনোযোগ হ্রাস ( কয়েক সপ্তাহ)
৭) পেটে গ্যাস ও কৌষ্ঠকাঠিন্য (কয়েক
সপ্তাহ) ৮) ঘন ঘন ক্ষুধা পাওয়া (২-৪
সপ্তাহ)
এই সব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সবার
ক্ষেত্রে দেখা দেবে এমন নয়। কারো
কারো ক্ষেত্রে এক বা একাধিক
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে
পারে।

0 comments:

Post a Comment