Friday, November 6, 2015

জেনে নিন , কিডনি নষ্টের ১০টি কারণ !

জেনে নিন , কিডনি নষ্টের ১০টি
কারণ !

স্বাস্থ্য ডেস্ক : যেহেতু কিডনি
ছাড়া আমরা অচল, তাই কিডনি নষ্ট
হওয়া থেকে বাঁচতে হলে আমাদের
প্রত্যেকেরই কিডনি সম্পর্কিত নিয়ম
পালন করা উচিত। কিন্তু আমাদের
অগোচরেই অনেক সময় কিছু
অসাবধানতার কারণে আমরা কিডনির
ক্ষতি করছি। জেনে নেই কিডনি নষ্টের
১০টি গুরুত্বপূর্ণ কারণসমূহ:১। প্রস্রাব
আটকে রাখা।২। পর্যাপ্ত পানি পান
না করা।
৩। অতিরিক্ত লবন খাওয়া।
৪। যেকোন সংক্রমণের দ্রুত চিকিৎসা
না করা।
৫। মাংস বেশি খাওয়া।
৬। প্রয়োজনের তুলনায় কম খাওয়া।
৭। অপরিমিত ব্যথার ওষুধ সেবন।
৮। ওষুধ সেবনে অনিয়ম।
৯। অতিরিক্ত মদ খাওয়া।
১০। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নেওয়া।
মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গের মত
কিডনিও আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনিকে মানব দেহের ফিল্টার বলা
হয়। কারণ কিডনি প্রাণী শরীরের
পানি ফিল্টার করে আমাদের সুস্থ
রাখতে সাহায্য করে। কিডনির যদি নষ্ট
হয়ে যায় তাহলে বেঁচে থাকাও আর
সম্ভব নয়। তাই নিয়ম করে শরীরের যত্ন
নিন। সুস্থ থাকুন ভাল থাকুন এই শুভ
কামনাই আমাদের আপনাদের প্রতি।
কিডনি ও কিডনি রোগ সম্পর্কে জানুন
এবং সচেতন হোন।
আপনি জানেন কি, আপনার দুটো
কিডনি প্রতিদিন প্রায় ১৭০ লিটার
রক্ত পরিশোধিত করে আপনার শরীরকে
সুস্থ রাখে?
দুটো কিডনিতে প্রায় ২০-২৫ লাখ
ছাঁকনি রয়েছে, যা অনবরত আপনার
রক্তকে পরিশোধিত করে যাচ্ছে।
কিডনি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে,
রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে এবং
আপনার অস্থিগুলো শক্তিশালী করে
থাকে।
শরীর সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখার জন্য
একটি কিডনিই যথেষ্ট।
কিডনির প্রধান রোগ নেফ্রাইটিস বা
নেফ্রোটিক সিনড্রোম, যা কিডনির
ছাঁকনি বা ফিল্টার মেমব্রেনকে
ক্ষতবিক্ষত করে। এর কারণে শরীর
থেকে অত্যাবশ্যক প্রোটিন বেরিয়ে
যায়।
প্রস্রাব প্রদাহ কিডনির একটি সাধারণ
রোগ হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে
মারাত্মক হতে পারে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ কিডনি
রোগ নয়, তবু কিডনিকে আক্রান্ত করে
কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে
মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করে।
যেসব রোগ কিডনিকে আক্রান্ত করে
কিডনির কার্যকারিতা বিনষ্ট করে বা
কিডনি ফেইলুর হয়: ১. নেফ্রাইটিস ২.
ডায়াবেটিস ও ৩. উচ্চ রক্তচাপ। সুতরাং
প্রাথমিক পর্যায় থেকে এসব রোগের
চিকিত্সায় যত্নবান হোন।
দুটো কিডনি ৯০ শতাংশ অকেজো
হওয়ার পরই কেবল ডায়ালাইসিস বা
কিডনি সংযোজনের মতো চিকিত্সার
প্রয়োজন হয়।
জীবিত অবস্থায় আপনি আপনার একটি
কিডনি কেবল মা-বাবা, ভাইবোন,
ছেলেমেয়েকে নির্ভয়ে দান করতে
পারেন। তাঁদের ভেতর রক্তের গ্রুপ বা
টিস্যু
টাইপ না মিললে তখন আপন চাচা,
মামা, ফুফু, খালা বা স্বামী-স্ত্রী
একে অপরকে কিডনি দান করতে
পারেন।
মৃত ব্যক্তি (ব্রেনডেথ-ভেন্টিলেটরে
থাকা অবস্থায়) আত্মীয়-অনাত্মীয়
সবাইকে কিডনি দিতে পারে।
৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ডায়াবেটিস
রোগী কিডনি রোগে ভোগে থাকে।
উচ্চ রক্তচাপের কারণে ২০ থেকে ৪০
শতাংশ রোগীর কিডনি অকেজো হতে
পারে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখুন এবং কিডনি
রোগ থেকে বাঁচুন।
শুধু রক্তচাপ, প্রস্রাব পরীক্ষা এবং
রক্তের ক্রিয়েটিনিন ও সুগার পরীক্ষা
করেই জানা যায় কিডনি রোগ আছে
কি না।
কিডনি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেলে
ডায়ালাইসিস অথবা কিডনি
সংযোজনই হলো বেঁচে থাকার একমাত্র
উপায়।
শিশুদের টনসিলাইটিস, প্রস্রাবে
প্রদাহ ও চর্মরোগের তাত্ক্ষণিক
চিকিৎসা করুন।
কিডনি রোগ ছোঁয়াচে নয়, তবে
বংশানুক্রমিক হতে পারে।
আপনার বয়স যদি ৪০ বছরের ওপরে হয়,
আপনি যদি ডায়াবেটিস বা উচ্চ
রক্তচাপে ভুগে থাকেন অথবা বংশে
যদি কিডনি রোগ থাকে, তবে অবশ্যই
আপনার রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করে
জেনে নিন, আপনার কিডনি রোগ আছে
কি না।
কিডনি নষ্ট হলে ডায়ালাইসিস করে
চিকিৎসা করার সামর্থ্য
বাংলাদেশে ১০ শতাংশেরও নেই।
কিডনি রোগ সম্পর্কে জানুন, সতর্ক থাকুন
এবং প্রতিরোধ করুন।
সচেতন হলে স্বল্প ব্যয়ে প্রাথমিক
পর্যায়ে কিডনি রোগ নির্ণয় ও
প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বর্তমান ধারায় কিডনি রোগী বৃদ্ধি
পেলে ২০২০ সালে বাংলাদেশে
তিন কোটি ৮০ লাখ মানুষ ক্রনিক
কিডনি রোগে আক্রান্ত হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে দুই কোটি
লোক কোনো না কোনো কিডনি
রোগে আক্রান্ত।
বাংলাদেশে প্রায় ৪০ হাজার রোগী
ধীরগতিতে কিডনি অকেজো হয়ে
প্রতিবছর অকালে মৃত্যুবরণ করে।
অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধের
ব্যবহার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কিডনি
রোগের কারণ হতে পারে।
আকস্মিক কিডনি বিকল রোগে
তাৎক্ষণিক চিকিৎসা অনেক
রোগীকে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন
ফিরিয়ে দিতে পারে।
অতিরিক্ত ডায়রিয়া, বমি ও রক্তক্ষরণে
আকস্মিক কিডনি বিকল হওয়ার প্রধান
কারণ।
মেয়েদের গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ
পরবর্তী পর্যায়ে কিডনি রোগের কারণ
হতে পারে।
নেফ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ
রক্তচাপ ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে কিডনি
বিকলের কারণ।অধ্যাপক হারুন আর রশিদ
কিডনি সভাপতি, কিডনি ফাউন্ডেশন ও
বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশন
কিডনি সুস্থ্য রাখার ৭ টি উপায়
কিডনি ফেইলুর বা রেনাল ফেইলুর
শরীরের এক নীরব ঘাতক, প্রায় প্রতিটি
পরিবারেরই কেউ না কেউ এই ভয়াবহ
রোগে আক্রান্ত। তাই আমরা সকলেই
কমবেশী জানি এ রোগের ভোগান্তি
কতটা নির্মম; কিন্ত আমরা কি জানি
কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে সহজেই
এই রোগ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। আসুন
জেনে নেই কিভাবে সহজেই আপনার
কিডনিকে সুস্থ্য রাখা সম্ভব,
১। কর্মঠ থাকুনঃ নিয়মিত
হাটা,দৌড়ানো,স্লাইকিং করা বা
সাতার কাটার মতো হাল্কা ব্যায়াম
করে আপনার শরীরকে কর্মঠ ও সতেজ
রাখুন। কর্মঠ ও সতেজ শরীরে অন্যান্য
যেকোন রোগ হবার মতো কিডনি রোগ
হবার ঝুকিও খুব কম থাকে।
২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখুনঃ
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর
শতকরা ৫০ জনই কিডনি রোগে আক্রান্ত
হন। রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রনে না থাকলে
কিডনি নষ্ট হবার ঝুকি আরো বেড়ে
যায়। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে
রাখুন,নিয়মিত আপনার রক্তের সুগার
পরীক্ষা করিয়ে দেখুন তা স্বাভাবিক
মাত্রায় আছে কিনা, না থাকলে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শুধু তাই নয়
অন্তত তিন মাস পরপর হলেও একবার
আপনার কিডনি পরীক্ষা করিয়ে
জেনে নিন সেটা সুস্থ্য আছে কিনা।
৩। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখুনঃ
অনেকেরই ধারনা যে উচ্চ রক্তচাপ শুধু
ব্রেইন স্ট্রোক (stroke) আর হার্ট এটাকের
(heart attack) এর ঝুকি বাড়ায়,তাদের
জেনে রাখা ভালো যে কিডনি
ফেইলুর হবার প্রধান কারণ হলো
অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ। তাই এ রোগ
থেকে বাঁচতে অবশ্যই আপনার রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে। কোন কারনে
তা ১২৯/৮৯ মি,মি, এর বেশী হলে
সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ
নিতে হবে। নিয়মিত অসুধ সেবন এবং
তদসংক্রান্ত উপদেশ মেনে চললেই
সহজেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়।
৪। পরিমিত আহার করুন এবং ওজন
নিয়ন্ত্রনে রাখুনঃ অতিরিক্ত ওজন
কিডনির জন্য ঝুকিপূর্ণ,তাই সুস্থ্য থাকতে
হলে ওজন কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায়
নিয়ে আসতে হবে। পরিমিত স্বাস্থ্যকর
খাবার খেলে কিডনি রোগ হবার ঝুকি
অনেক কমে যায়।অন্য দিকে হোটেলের
তেলমশলা যুক্ত খাবার,ফাষ্টফুড,
প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে রোগ
হবার ঝুকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।
মানুষের দৈনিক মাত্র ১ চা চামচ লবন
খাবার প্রয়োজন আছে -খাবারে
অতিরিক্ত লবন খাওয়াও কিডনি রোগ
হবার ঝুকি বাড়িয়ে দেয়। তাই
খাবারে অতিরিক্ত লবন পরিহার করুন।
৫। ধুমপান পরিহার করুনঃ অধুমপায়ীদের
তুলনায় ধুমপায়ীদের কিডনি ক্যান্সার
হবার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ গুণ বেশী। শুধু
তাই নয় ধুমপানের কারণে কিডনিতে
রক্তপ্রবাহ কমে যেতে থাকে এবং এর
ফলে কিডনির কর্মক্ষমতাও হ্রাস পেতে
শুরু করে। এভাবে ধুমপায়ী একসময় কিডনি
ফেইলুর রোগে আক্রান্ত হয়ে যায়।
৬। অপ্রয়োজনীয় অসুধ সেবনঃ আমাদের
মাঝে অনেকেরই বাতিক রয়েছে
প্রয়োজন / অপ্রয়োজনে দোকান থেকে
অসুধ কিনে খাওয়া। এদের মধ্যে ব্যথার
অসুধ (NSAID) রয়েছে শীর্ষ তালিকায়।
জেনে রাখা ভাল যে প্রায় সব অসুধই
কিডনির জন্য কমবেশী ক্ষতিকর আর এর
মধ্যে ব্যথার অসুধ সবার চেয়ে এগিয়ে।
নিয়ম না জেনে অপ্রয়োজনীয় অসুধ
খেয়ে আপনি হয়তো মনের অজান্তেই
আপনার কিডনিকে ধংস করে যাচ্ছেন -
তাই যে কোন অসুধ ব্যবহারের আগে
অবশ্যই নিবন্ধিত চিকিৎসকের কাছ
থেকে জেনে নিন তা আপনার ক্ষতি
করবে কিনা।
৭। নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানঃ
আমাদের মাঝে কেউ কেউ আছেন
যাদের কিডনি রোগ হবার ঝুকি অনেক
বেশী, তাদের অবশ্যই নিয়মিত কিডনি
পরীক্ষা করানো উচিত। কারো যদি
ডায়াবেটিস এবং / অথবা উচ্চ রক্তচাপ
থাকে,ওজন বেশী থাকে (স্থুলতা /
Obesity),পরিবারের কেউ কিডনি রোগে
আক্রান্ত থাকে তাহলে ধরে নিতে
হবে তার কিডনি রোগে আক্রান্ত হবার
ঝুকি অনেক বেশী। তাই এসব কারন
থাকলে অবশ্যই নিয়মিত কিডনি
পরীক্ষা করাতে হবে।
কিডনি ফেইলুর হয়ে গেলে ভালো
হয়ে যাবার কোন সুযোগ নেই,
ডায়ালাইসিস কিংবা প্রতিস্থাপন
(Renal Transplant) করে শুধু জীবনকে
দীর্ঘায়িত করা সম্ভব। তাই এই রোগ
এড়িয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে
যাওয়াটা প্রতিটি সুস্থ্য মানুষের জন্য
বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

0 comments:

Post a Comment