আজকের শিশু আগামী দিনের
জাতির কর্ণধার। একটি জাতির
সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে
শিশুরা। আজকে যারা শিশু তাদের
যদি আমরা যত্ন সহকারে, সুস্থ-সুন্দর
পরিবেশ বিকাশ লাভের সুযোগ
করে দিই, তা হলে ভবিষ্যতে তারা
হবে এদেশের এক একজন আদর্শ, কর্মক্ষম
ও সুযোগ্য নাগরিক। এক সময় তারা
দেশের প্রতিটি সেক্টরে
অসাধারণ দক্ষতার পরিচায় দিয়ে এ
দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে
যাবে। আমাদের দেশের বেশির
ভাগ শিশু সুষ্ঠু বিকাশের উপযুক্ত
পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। তবে
আশার কথা, ইদানীং আমাদের
মধ্যে শিশুদের চাহিদা এবং
তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য
সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমাদের সংবিধানের ও শিশু
অধিকার সংক্রান্ত আইন রয়েছে।
এসব আইনের প্রয়োগের বিষয়ে
আমাদের ভাবতে হবে।শরীর ও মন
উভয়ই শিশুর সামগ্রিক গঠনের
অন্তর্ভুক্ত। প্রথম জীবন থেকেই শিশুর
শরীরের হয় বৃদ্ধি আর মনের হয়
বিকাশ। শরীরের বৃদ্ধি মানে
বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিবর্তন ও
আকৃতি বৃদ্ধি পাওয়া। অন্য দিকে
মনের বিকাশ মানে শিশুর জ্ঞান,
বুদ্ধি, মেধা, আবেগ ও অন্যের সাথে
মেলামেশা করার দক্ষতা অর্জন
করা। একটি শিশুকে পরিপূর্ণ মানুষ
হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তার
শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি
মানসিক বৃদ্ধি বা মনের বিকাশেরও
সমান ভাবে সুযোগ করে দিতে
হবে।
অত্যধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত
বাংলাদেশের এক একটি শিশুকে
দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করে দেশের
সমৃদ্ধি অর্জন করতে হলে এর বিকল্প
নেই। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব,
সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি তথা
সব ধরনের সামাজিক অবক্ষয় থেকে
জাতিকে রক্ষা করতে হলে শিশুর
পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করতে
হবে।গর্ভাবস্থা থেকে প্রথম পাঁচ
বছর শিশুর বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ
সময়।জীবনের প্রথম বছর গুলোতে শিশু
যা শেখে, যেভাবে শেখে; তা-ই
তাদের ভবিষ্যৎ বুদ্ধিমত্তা,
ব্যক্তিত্ব, নৈতিক ও সামাজিক
আচরণের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
মানসিক বিকাশ মস্তিষ্কের
বিকাশের ওপর নির্ভরশীল।
মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় নিউরন
নামক মস্তিষ্কের কোষের সংখ্যা
বৃদ্ধি পেতে থাকে। গর্ভবতী
মায়ের সুষম খাবার, শারীরিক ও
মানসিক সুস্থতা গর্ভস্থ শিশুর
নিউরনের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
জন্মের পর এ কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি
হয় না, তবে পারস্পরিক ক্রিয়ামূলক
উদ্দীপনার দ্বারা নিউরন গুলোর
মধ্যে সংযোগ ঘটে এবং সেগুলো
সক্রিয়হয়। এ জন্য শিশু যাতে তার
পাঁচটি ইন্দ্রিয় প্রতিদিন বারবার
ব্যবহারের সুযোগ পায়, তার দিকে
যত্নবান হতে হবে। এতে মস্তিষ্কের
বিভিন্ন কোষের মধ্যে সংযোগ
ঘটবে এবং বারবার ব্যবহৃত সংযোগ
গুলো স্থায়ী হয়ে শিশুর দক্ষতা বৃদ্ধি
করতে থাকবে। শিশুর প্রথম জীবনে এ
ধরনের বিকাশের জন্য মা-বাবা সহ
পরিবারের অন্য সদস্যদেরও বিশেষ
ভূমিকা প্রয়োজন।
নিচের বিষয় গুলো নিশ্চিত করতে
পারলে একটি শিশু সুষ্ঠু শারীরিক ও
মানসিক বিকাশের সুযোগ লাভ
করবে :
১. গর্ভাবস্থায় মায়ের সুষম খাবার,
শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য
নিশ্চিত করা। নিরাপদ প্রসব ও প্রসব-
উত্তর পর্যাপ্ত যতের ব্যবস্থা করা।
২. শিশুর জন্মের পরপর শাল দুধ, ছয় মাস
বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ এবং পরে
বুকের দুধের পাশাপাশি
পরিবারের অন্যান্য স্বাভাবিক
খাবার দেয়া।
৩. শিশুকে প্রচলিত সাতটি রোগের
টিকা প্রদান এবং অসুস্থ হলে
প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসার ব্যবস্থা
করা।
৪. বুকের দুধ খাওয়ানো কিংবা
দৈনন্দিন কাজের সময় শিশুর দিকে
তাকিয়ে কথা বলা, মৃদু স্বরে গান
গাওয়া, দিনের কিছু সময় মৃদু শব্দে
শিশুকে উদ্দীপ্ত করা।
৫. শিশুর সাথে লুকোচুরি সহ
বিভিন্ন ধরনের আনন্দময় খেলাধুলা
করা। হাত-পা নেড়ে হালকা
ব্যায়াম করানো এবং সাথে
আনন্দসূচক শব্দ করে কথা বলা। গান,
ছড়া ওমজার মজার গল্প করে শিশুকে
সক্রিয়া করা।
৬. শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সহ
পরিবেশের নতুন নতুন জিনিসের
সাথে শিশুর পরিচয় করিয়ে দেয়া।
শিশুকে ছোট ছোট প্রশ্ন করা এবং
জবাব দেয়া।
৭. শিশুকে বসতে, দাঁড়াতে ও
হাঁটতে সহায়তা করা। নিরাপদ
পরিবেশে বাড়িতে ছোটাছুটি
বা গড়াগড়ি করতে দেয়া (এমনকি
আঙিনা বা মাঠের সবুজ ঘাসেও)।
৮. শিশুকে দাঁত মাজা, হাত ধোয়া,
নিজে নিজে পোশাক পরা,
প্রস্রাব-পায়খানার নির্দিষ্ট স্থান
ব্যবহার করতে শেখানো।
৯. শিশুকে পরিবারে ছোট ছোট
কাজে উৎসাহিত করা, পর্যাপ্ত
খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা
করা এবং শিশুর ভালো কাজের
প্রশংসা করা।
১০. অন্য শিশু ও পরিবারের বাইরের
লোকদের সাথে মেলা মেশার
সুযোগ করে দেয়া।বড়দের সাথে
কিভাবে আচরণ করতে হবে, তা
শেখানো এবং পালন করতে
উৎসাহিত করা।
সূত্র - নয়া দিগন্ত
জাতির কর্ণধার। একটি জাতির
সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে
শিশুরা। আজকে যারা শিশু তাদের
যদি আমরা যত্ন সহকারে, সুস্থ-সুন্দর
পরিবেশ বিকাশ লাভের সুযোগ
করে দিই, তা হলে ভবিষ্যতে তারা
হবে এদেশের এক একজন আদর্শ, কর্মক্ষম
ও সুযোগ্য নাগরিক। এক সময় তারা
দেশের প্রতিটি সেক্টরে
অসাধারণ দক্ষতার পরিচায় দিয়ে এ
দেশকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে
যাবে। আমাদের দেশের বেশির
ভাগ শিশু সুষ্ঠু বিকাশের উপযুক্ত
পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। তবে
আশার কথা, ইদানীং আমাদের
মধ্যে শিশুদের চাহিদা এবং
তাদের প্রতি আমাদের কর্তব্য
সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আমাদের সংবিধানের ও শিশু
অধিকার সংক্রান্ত আইন রয়েছে।
এসব আইনের প্রয়োগের বিষয়ে
আমাদের ভাবতে হবে।শরীর ও মন
উভয়ই শিশুর সামগ্রিক গঠনের
অন্তর্ভুক্ত। প্রথম জীবন থেকেই শিশুর
শরীরের হয় বৃদ্ধি আর মনের হয়
বিকাশ। শরীরের বৃদ্ধি মানে
বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পরিবর্তন ও
আকৃতি বৃদ্ধি পাওয়া। অন্য দিকে
মনের বিকাশ মানে শিশুর জ্ঞান,
বুদ্ধি, মেধা, আবেগ ও অন্যের সাথে
মেলামেশা করার দক্ষতা অর্জন
করা। একটি শিশুকে পরিপূর্ণ মানুষ
হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তার
শারীরিক বৃদ্ধির পাশাপাশি
মানসিক বৃদ্ধি বা মনের বিকাশেরও
সমান ভাবে সুযোগ করে দিতে
হবে।
অত্যধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত
বাংলাদেশের এক একটি শিশুকে
দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করে দেশের
সমৃদ্ধি অর্জন করতে হলে এর বিকল্প
নেই। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব,
সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি তথা
সব ধরনের সামাজিক অবক্ষয় থেকে
জাতিকে রক্ষা করতে হলে শিশুর
পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করতে
হবে।গর্ভাবস্থা থেকে প্রথম পাঁচ
বছর শিশুর বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ
সময়।জীবনের প্রথম বছর গুলোতে শিশু
যা শেখে, যেভাবে শেখে; তা-ই
তাদের ভবিষ্যৎ বুদ্ধিমত্তা,
ব্যক্তিত্ব, নৈতিক ও সামাজিক
আচরণের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়।
মানসিক বিকাশ মস্তিষ্কের
বিকাশের ওপর নির্ভরশীল।
মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় নিউরন
নামক মস্তিষ্কের কোষের সংখ্যা
বৃদ্ধি পেতে থাকে। গর্ভবতী
মায়ের সুষম খাবার, শারীরিক ও
মানসিক সুস্থতা গর্ভস্থ শিশুর
নিউরনের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
জন্মের পর এ কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি
হয় না, তবে পারস্পরিক ক্রিয়ামূলক
উদ্দীপনার দ্বারা নিউরন গুলোর
মধ্যে সংযোগ ঘটে এবং সেগুলো
সক্রিয়হয়। এ জন্য শিশু যাতে তার
পাঁচটি ইন্দ্রিয় প্রতিদিন বারবার
ব্যবহারের সুযোগ পায়, তার দিকে
যত্নবান হতে হবে। এতে মস্তিষ্কের
বিভিন্ন কোষের মধ্যে সংযোগ
ঘটবে এবং বারবার ব্যবহৃত সংযোগ
গুলো স্থায়ী হয়ে শিশুর দক্ষতা বৃদ্ধি
করতে থাকবে। শিশুর প্রথম জীবনে এ
ধরনের বিকাশের জন্য মা-বাবা সহ
পরিবারের অন্য সদস্যদেরও বিশেষ
ভূমিকা প্রয়োজন।
নিচের বিষয় গুলো নিশ্চিত করতে
পারলে একটি শিশু সুষ্ঠু শারীরিক ও
মানসিক বিকাশের সুযোগ লাভ
করবে :
১. গর্ভাবস্থায় মায়ের সুষম খাবার,
শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য
নিশ্চিত করা। নিরাপদ প্রসব ও প্রসব-
উত্তর পর্যাপ্ত যতের ব্যবস্থা করা।
২. শিশুর জন্মের পরপর শাল দুধ, ছয় মাস
বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ এবং পরে
বুকের দুধের পাশাপাশি
পরিবারের অন্যান্য স্বাভাবিক
খাবার দেয়া।
৩. শিশুকে প্রচলিত সাতটি রোগের
টিকা প্রদান এবং অসুস্থ হলে
প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসার ব্যবস্থা
করা।
৪. বুকের দুধ খাওয়ানো কিংবা
দৈনন্দিন কাজের সময় শিশুর দিকে
তাকিয়ে কথা বলা, মৃদু স্বরে গান
গাওয়া, দিনের কিছু সময় মৃদু শব্দে
শিশুকে উদ্দীপ্ত করা।
৫. শিশুর সাথে লুকোচুরি সহ
বিভিন্ন ধরনের আনন্দময় খেলাধুলা
করা। হাত-পা নেড়ে হালকা
ব্যায়াম করানো এবং সাথে
আনন্দসূচক শব্দ করে কথা বলা। গান,
ছড়া ওমজার মজার গল্প করে শিশুকে
সক্রিয়া করা।
৬. শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সহ
পরিবেশের নতুন নতুন জিনিসের
সাথে শিশুর পরিচয় করিয়ে দেয়া।
শিশুকে ছোট ছোট প্রশ্ন করা এবং
জবাব দেয়া।
৭. শিশুকে বসতে, দাঁড়াতে ও
হাঁটতে সহায়তা করা। নিরাপদ
পরিবেশে বাড়িতে ছোটাছুটি
বা গড়াগড়ি করতে দেয়া (এমনকি
আঙিনা বা মাঠের সবুজ ঘাসেও)।
৮. শিশুকে দাঁত মাজা, হাত ধোয়া,
নিজে নিজে পোশাক পরা,
প্রস্রাব-পায়খানার নির্দিষ্ট স্থান
ব্যবহার করতে শেখানো।
৯. শিশুকে পরিবারে ছোট ছোট
কাজে উৎসাহিত করা, পর্যাপ্ত
খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা
করা এবং শিশুর ভালো কাজের
প্রশংসা করা।
১০. অন্য শিশু ও পরিবারের বাইরের
লোকদের সাথে মেলা মেশার
সুযোগ করে দেয়া।বড়দের সাথে
কিভাবে আচরণ করতে হবে, তা
শেখানো এবং পালন করতে
উৎসাহিত করা।
সূত্র - নয়া দিগন্ত
0 comments:
Post a Comment